ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ০৭/০৮/২০২৫ ৩:৩৯ পিএম , আপডেট: ০৭/০৮/২০২৫ ৩:৪৩ পিএম
সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে চলে গেছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথের ২৭ কিলোমিটার অংশ। এ এলাকা ছিল এশিয়ান হাতির প্রাকৃতিক চলাচলের পথ।

রেললাইন বসানোর সময় ওভারপাস ও আন্ডারপাস তৈরি হলেও দুর্ঘটনা পুরোপুরি ঠেকানো যায়নি—গত এক বছরে ট্রেনের ধাক্কায় প্রাণ গেছে একটি বাচ্চা হাতির, অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছে আরও কয়েকটি।

এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে এবার রেলওয়ে বসাচ্ছে ৬টি আধুনিক সেন্সর বিশিষ্ট রোবটিক ক্যামেরা। বিদেশ থেকে আনা এসব যন্ত্র হাতির অবয়ব শনাক্ত করে তাৎক্ষণিক সংকেত পাঠাবে। সংকেত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রেললাইনের পাশে লাল বাতি জ্বলে উঠবে, যা দেখে ট্রেনচালক গতি কমিয়ে ট্রেন থামাবেন। সেন্সর-ক্যামেরা এবং সংকেতবাতি একই সঙ্গে কাজ করবে, যাতে রাত বা কুয়াশার মধ্যেও হাতি শনাক্ত করা যায়।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ৬টি ক্যামেরা, সংকেতবাতি ও বৈদ্যুতিক কাজ মিলিয়ে প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। চলতি বছরের মধ্যেই এই প্রকল্প শেষ করার ইচ্ছা আছে রেলওয়ের। এরই মধ্যে ট্রেনচালক ও পরিচালকদের (গার্ড) এক দফা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যেখানে সংকেত পাওয়া মাত্র কীভাবে দ্রুত গতি কমিয়ে ট্রেন থামাতে হবে, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রকল্প শেষ হলে আরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

চুনতি, ফাঁসিয়াখালী ও মেধাকচ্ছপিয়া সংরক্ষিত বনাঞ্চল দিয়ে যে রেলপথ গেছে, সেখানে রয়েছে প্রায় ৪০-৫০টি এশিয়ান হাতি। বছরের বিভিন্ন সময়ে এরা বাঁশখালী, লোহাগাড়া ও চকরিয়ার বনে বিচরণ করে। খাবার বা পানির খোঁজে চলাচলের সময় তাদের রেললাইন পার হতে হয়, যা বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করে।

প্রকল্প পরিচালক ও রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মো. সবুক্তগীন কালবেলাকে বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথে হাতির করিডর থাকায় ওভারপাস, আন্ডারপাস নির্মাণসহ বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। হাতির পাল এসব আন্ডারপাস ও ওভারপাস ব্যবহার করে। তারপরও মাঝেমধ্যে রেললাইনে চলে আসে। এখানে আসার পর যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সে জন্য ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এগুলো রোবোটিক ও সেন্সর ক্যামেরা হিসেবে কাজ করবে। এর সঙ্গে সংকেতব্যবস্থা যুক্ত থাকবে।

তিনি আরও বলেন, ক্যামেরাগুলো হাতির অবয়ব চিহ্নিত করতে পারবে। যদি কখনো হাতি বা হাতির পাল রেললাইনে চলে আসে, তাহলে তা ছবি আকারে সিগন্যাল বা সংকেত পাঠাবে। এই সংকেত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রেললাইনের পাশে থাকা লাল বাতিগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলে উঠবে। এ লাল বাতি দেখে চলন্ত ট্রেনের লোকোমাস্টার বুঝতে পারবেন, রেললাইনে হাতির পাল বা হাতি রয়েছে। তখন তিনি ট্রেনের গতি কমাবেন বা প্রয়োজনে থামাবেন। পরে হাতি চলে গেলে গতি বাড়াবেন।

২০২৪ সালের ১৩ অক্টোবর চুনতি এলাকায় ট্রেনের ধাক্কায় একটি হাতি আহত হয়ে মারা যায়। হাতিটিকে উদ্ধার করে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু দুই দিন পর মারা যায়। সেই ঘটনার পর ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর রেলপথ মন্ত্রণালয় অভয়ারণ্য ও জাতীয় উদ্যান এলাকায় ট্রেনের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার নির্ধারণ করে।

২০২৫ সালের ২২ জুলাই রাত ১০টা ২৫ মিনিটে একই এলাকায় আরেকটি দুর্ঘটনা অল্পের জন্য এড়ানো যায়। সৈকত এক্সপ্রেসের চালক আবদুল আওয়াল দূর থেকে রেললাইনে দাঁড়ানো একটি হাতি দেখে হার্ড ব্রেক চেপে ট্রেন থামিয়ে দেন। যদিও হাতির পালে থাকা আরেকটি হাতি ‘বিরক্ত’ হয়ে ট্রেনের শেষ বগিতে ধাক্কা দেয়, তবে এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়। এরপর থেকে প্রতিদিন এই পথে দিনে ও রাতে চার জোড়া ট্রেন নিয়মিত চলাচল করছে। সূত্র কালবেলা

পাঠকের মতামত

প্রেমিক জুটি আটক, গরিবের মেয়ে বলে মেনে নিতে নারাজ ছেলে পক্ষ

টেকনাফের হ্নীলা উলুচামরী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা প্রেমিক-প্রেমিকাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। তবে প্রেমিকা গরিব ...

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগউখিয়ায় অনিয়ম নিয়ে কথা বলায় চাকরি হারালেন এনজিও কর্মী

উখিয়া-টেকনাফ ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থায় স্থানীয় মাঠকর্মীদের দেদারসে ছাঁটাইয়ের মিশন চলছে সম্প্রতি ...

কক্সবাজারে জামায়াত: “বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন না হলে জুলাই জাগরণ নেমে আসবে”

কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা নূর আহমদ আনোয়ারী বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষিত রোড ম্যাপের ...